গুচ্ছ কবিতা

গুচ্ছ কবিতা

গুচ্ছ কবিতা

-সেলিম মিয়া


শূন্যস্থান পূরণ

১.

ঈশ্বর

নৈঃশব্দ

অন্ধকার

যেমন খুশি তেমন আঁকার

পাণ্ডুলিপির

সাদা

পেপার।

দায়ভার শুধু একান্তই তোমার।

২.

মানুষের মন

মহাশূন্যের মতন

যেমন ইচ্ছে তেমন

শূন্যস্থান পূরণ।

বর্বর

ঈশ্বরের কাছে ছিল নিবিষ্ট প্রার্থনা—

কোনোই অর্থ না,

মানুষের কুসুম-কোমল মন বর চাই বর।

ঈশ্বর বুঝি-বা বুঝলেন ‘অর্থহীন বর’

অর্থের মানুষ তাই রইলো বর্বর।

‘বর বাদ চাই’ বলে কোনো প্রতিবাদ

শুনলেন না ঈশ্বর, সব বরবাদ।

স্রষ্টার স্রষ্টা

সৃষ্টি শেষে শিল্পী মরে গেলে

সৃষ্টি নিজে সৃষ্টি হতে থাকে

রক্তবীজের মতন,

সৃষ্টি শেষে ঈশ্বর যেমন মরে যায়

আবার হতেই থাকে জন্ম তার সৃষ্টির ভেতরে।

সৃষ্টি তাই স্রষ্টারও স্রষ্টা।

অক্ষরবৃত্ত

অক্ষরের বৃত্তে শুধু যে অক্ষর

একটানে মিলেছে বৃত্ত বরাবর

কেন্দ্রে তার গোলক ঈশ্বর

জলছাপে এঁকেছেন নির্জন স্বাক্ষর;

সেই ছাপে এক মাপে এমন সাক্ষর

ধাপে ধাপে খাপে খাপে প্রতিটা অক্ষর।

শুদ্ধতার সুর

বাতাসে শুদ্ধতা ভাসে আকাশে মৌনতা;

ঝিলের শাপলাগুলি বুকে লয়ে কথা

কাটায় সময় পাঁপড়ির উম্মীলনে,

মেঘ তবু বৃষ্টি-জাগানিয়া অন্য বনে।

অন্ধের অন্ধকার

অন্ধ কার চোখে দেখে অন্ধকার?

দেখে বন্ধ দ্বার!

অন্ধ তার বুকের আনন্দ ভার,

বেদনা অপার

স্কন্ধ ন্যূব্জ হয়ে লুকায় আবার।

দান-প্রতিদান

বিষাদের সন্তান যে গান

তার অবয়ব জুড়ে নিস্পাপ আত্মার প্রতিদান,

অথৈ বেদনায় ছানা সুরের লহরী,

পারে পারে উছলানো জোছনারও বান।

এতটুকু দান!

অবিরাম

সূর্যের বিশ্রাম হয় না কখনো

হয় না বিশ্রাম পৃথিবীরও,

শ্রমিকেরও যে নেই বিরাম

নিয়তির এই পরিণাম।

নৈঃশব্দের ঈশ্বর

নৈঃশব্দে অব্দে অব্দে

বসে আছেন ঈশ্বর,

শব্দে শব্দে প্রার্থনা তাই

জাগায়নি শুদ্ধ স্বর।

গন্ধগুচ্ছ

প্রকৃতি প্রকৃতই রেখেছে কৃতি

ঘাসের ফ্রেমে বেঁধেছে রাতের ঘর্মাক্ত স্মৃতি।

পৃথিবীর এত আলো, এত রঙ-আধার

তবু যেন সব আঁধারের অধিকার।

এবার আমি আঁধার হবো

ল্যামপোস্ট সব গিলেই খাবো।

দিনের সূর্যটা আছে যে উষ্ণ গোঁ ধরে—

চুমু খাবে সুশীতল তুষার-অধরে।

প্রেমিক শ্রমিক এক পাথর খনির

খুঁট খুঁট শব্দ করে পেটায় হাতুড়ি

কিছু যদি চমকায় মুক্তা ও মনির।

জলের অস্থিতে কেউ যে পায় না স্বস্থি

আঘাতের চিহ্ন ব্যতিরেকে।

ইচ্ছে ছিল তৃণ ডগায় মেঘের গান বাজাবো

আশপাশের লতাপাতায় জলের প্রাণ জাগাবো

ইচ্ছে মোর দূর আকাশে বাস্প হল আজ

বৃষ্টি হয়ে ঝরলো না সে—বৃথাই সব কাজ।


Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*