দুটি কবিতা

কবিতা

কবিতা

দুটি কবিতা

-সেলিম মিয়া


চেতনা

চেতো না এত চেতনা
-চেতো না এত চেতনা
সময় হলে চেতিও;
অসময়ে সবই বৃথা
সময়েই তাতিয়ো,
ইচ্ছেমতো মাতিয়ো।

  • যে পারে সব সময়ই সে উন্মুখ

অসময়ের দোহাই দিয়ে থাকে না বিমুখ

কখনো খায় গিলে ঢোক কখনো চুকচুক

ইচ্ছেমতো নিংড়ে খায় জীবনের সুখ।

–তবুও এখন চেতো না তুমি চেতনা,

ওভাবে হাত যেন পেতো না।

থেকো না হয়ে খানিক সুচেতনা!

সময়ের কাছে সময়ের কিছু থাকে দেনা,

তা চুকলেই মেটাবো তোমার পাওনা।

কথা দিলাম, কথা দিলাম চেতনা।

বৃথা আয়োজন

এই যে আমি সারা বেলা এক মনে কাজ করি

মন থেকে তোমাকে ভোলার জন্য,

আর কাজের ভ্রান্তি ঘোচাতে খানিকটা বিরাম নেই;

সেই বিরামও তোমাকে মনে করিয়ে দেয় অবিরাম।

এই যে আমি মেদুর হাওয়ায় মাদুর ভরে রোদ্দুর কুড়াই

মনকে ফুরফুরে করার জন্য

সে রোদ্দুরও যদ্দূর পারে মনে করিয়ে দেয় তোমাকে।

এই যে বর্ষার বৃষ্টিতে আমি তাকাই এক দৃষ্টিতে

ভিজতে যাই না পাছে মনে পড়ে তোমাকে

সে বৃষ্টিও যেন কী ঘ্রাণে মনে করায় তোমাকে।

এই যে অসহ্য যন্ত্রণায় যখন মগজে প্রায় রক্তক্ষরণ হয়

তখন ঘুমাই আমি মগজকে বিশ্রাম দিতে

সে ঘুমও আমাকে তোমার স্বপ্নে মগ্ন করে রাখে।

এই যে কোনো কোনো নিঝুম রাতে দুঃস্বপ্নে ঘুম ভাঙে

আর আত্মাটা ছটফট করে বেরিয়ে যেতে চায়,

তখন শত চেষ্টাতেও আসে না সে ঘুম।

সে জেগে থাকাও ব্যথার বাঁশি বাজিয়ে মনে করায় তোমাকে।

এই যে আমি সকালে উঠি আবার ব্যস্ততায় সুস্থ থাকবো বলে

চোখ খুললেই তবু তোমার আস্ত ছবি ভাসে চোখের মাঝে।

এই যে আমি খোলা আকাশ দেখি ঝোলা ভরা রুদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য

সে আকাশও মনে করিয়ে দেয় তোমাকে।

এই যে আমি গান শুনি, কবিতা পড়ি মনের জঞ্জাল সরানোর জন্য

তারাও সুরে ও ছন্দে কাঙাল হয়ে বলে যায় তোমার কথা।

এই যে কতদিন আমি অপেক্ষা করি উপেক্ষার অবসান ঘটাতে

সে অপেক্ষাও মনে করিয়ে দেয় তোমাকে।

এই যে প্রতি মুহূর্তে আমি নিঃশ্বাস নেই বাঁচবো বলে

মাঝে মাঝে তাও দীর্ঘশ্বাস হয়ে মনে করায় তোমাকে,

আর তোমার নিঃশ্বাস হয়ে ঢুকে দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরোনোর গল্পকে।

এই যে তোমাকে ভোলার জন্য আমার এত আয়োজন,

তবু সবই তার তোমাকেই করায় স্মরণ।


1 Trackback / Pingback

  1. Sagor

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*