আইসিস ইন ডার্কনেস – অনুবাদ

গল্প

আইসিস ইন ডার্কনেস

আইসিস ইন ডার্কনেস

মূল: মার্গারেট এটউড

অনুবাদ: সেলিম মিয়া


মঙ্গলবার করে যেমন সব সময়ই সাঙ্গিতীক ইন্টারলুড বাজত, তেমনই বাজছিল। লম্বা, সোজা, কালো চুলের মাঝখানে সিথিঁ করা একটি মেয়ে উঁচু টুলে বসেছিল। তার হাঁটু বরাবর ছিল অটোহার্প যন্ত্র। উচ্চ, স্পষ্ট কণ্ঠস্বরে কয়েকটা দুঃখের লোকগান গেয়েছিল সে। রিচার্ড দুঃশ্চিন্তা করছিল যতটুক রূঢ় হতে সে চেয়েছিল ততটুকু না হয়ে কীভাবে তার বাহু থেকে নারী কবির হাতটি সরানো যায়। (নারী কবিটি ছিলেন সিনিয়র, প্রকাশিত বই আছে তার, লোকজনকে জানতেন।) রিচার্ড ভেবেছিল যে, ওয়াশরূমের দোহাই দিতে পারে সে। কিন্তু ওয়াশরূমটা তো মূল রূমেরই পাশে। খুললেই পুরো রূমটা দেখা যেত। কোনও তালা ছিল না। আর ম্যাক্স দরজা খুলতে অভ্যস্ত ছিল তখনই যখন আপনি সেখানে গেছেন। আপনি যদি বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে প্রস্রাব না করতেন, তবে আপনাকে প্রদর্শনীতে রাখার সম্ভাবনা থাকত। বড়দিন উপলক্ষে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিনের দৃশ্য হিসেবে উজ্জ্বলভাবে আলোকিত প্রদর্শনীতে। আর আপনার কটিদেশের চারপাশে হাতড়ে বেড়াতেন।

ছেলেটির হাত চেপে ধরলে মেয়েটি

মেয়েটির বুকে ধরল ছুরি ছেলেটি,

মেয়েটি গেয়েছিল। রিচার্ড ভেবেছিল, শুধু চলে গেলেই হয় আমার। কিন্তু সে আসলে তা চাইনি।

ও উইলি, মেরো না আমায়, উইলি

পরপারের জন্য আমি নই তৈরি।

এর ঠিক পরেই সেলিনার আগমন ঘটেছিল। রিচার্ড তাকে আগে কখনও রূমটিতে দেখেনি। একমাত্র স্পটলাইটের নিচে ছোট্ট মঞ্চটিতে কোত্থেকে উড়ে এসে সে যেন জুড়ে বসেছিল।

ছোট-খাটো, হ্যাংলা-পাতলা ছিল সে। গায়িকার মতো তারও লম্বা, কালো চুলের মাঝখানে সিঁথি ছিল। চোখের চারপাশে ছিল কালো রেখা। এমন ফ্যাশনই ছিল সে সময়। লম্বা হাতা,  উঁচু-গলার কালো পোশাক পরে ছিল সে। তার ওপর নীল-সবুজ ফড়িংয়ের মতো দেখতে কারুকাজসহ একটা শাল ঝুলছিল।

রিচার্ড তার বাবার মতো তখনও স্কুল মাঠের অপবিত্র শব্দ ব্যবহার করত। মনে মনে ভেবেছিল, শালা। শালার আরেক কবি। গ্রাজুয়েট স্কুলের শব্দভাণ্ডার থেকে সে আরও যোগ করেছিল যে, আমার এখন মনে হচ্ছে আমরা বাইরের আরও যৌনাঙ্গ পাব।

তখনই কণ্ঠস্বরটা তাকে আঘাত করেছিল। উষ্ণ, সমৃদ্ধ কণ্ঠস্বর। দারুচিনির মতো কালো মশলাযুক্ত। আর  এত বিশাল ছিল যে এত ছোট ব্যক্তির কাছ থেকে আসছিল বলে মনেই হচ্ছিল না। কণ্ঠস্বরটা আবেদনময়ী ছিল, কিন্তু স্থূলভাবে নয়। বিস্ময়ের ঘরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। যৌথ ও শিরশির করা গোপনীয়তায় আমন্ত্রণ। চমকের ঘরে আমন্ত্রণ। তবে আনন্দ প্রদানেরও অন্তর্নিহিত ভাব ছিল। যেন যৌন-লালসা পেয়ে বসার মতো একজন বোকা ছিলেন আপনি। যেন বিশাল একটা মস্করা হতে যাচ্ছিল। শিশুদের মস্করার মতো সাধারণ, রহস্যজনক একটা মস্করা।

সেলিনা পড়েছিল সংক্ষিপ্ত, পরস্পর সংযুক্ত গীতিকবিতার একটা সিরিজ। “আইসিস ইন ডার্কনেস”। স্বর্গ ও মর্ত্যের মিশরীয় রানী পাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। ঘুরে ঘুরে তার নিহত প্রেমিক ওসিরিসের দেহের ছিন্নভিন্ন টুকরোগুলো জড়ো করছিলেন। একই সময়ে তিনি তার নিজের দেহখানি একসাথে করে পিছনে রাখছিলেন। আর বস্তুগত মহাবিশ্বও ছিল এটা। ভালোবাসা দিয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করছিলেন তিনি।

এসব যে ঘটছিল তা মিশরীয়দের প্রাচীন মধ্য রাজ্যে নয় কিন্তু। ঘটছিল সমতল, ঘিঞ্জি টরন্টোর স্প্যাডিনা অ্যাভিনিউয়ে রাতের বেলায় অন্ধকার হয়ে যাওয়া পোশাক কারখানা ও মাংস-পনিরের দোকান ও মদের দোকান এবং বন্ধকি মহাজনের দোকানের মধ্যে। এটা ছিল এক ধরণের বিলাপ। আবার উদযাপনও। রিচার্ড এরকম কিছু শোনেনি কখনও।

ছাড়া ছাড়া দাড়িতে আঙুল বুলিয়ে চেয়ারে বসে পড়েছিল সে। সাধ্যমত কঠোরভাবে চেষ্টা করছিল এ মেয়েটি ও তার কবিতাকে তুচ্ছ, ব্যবহারজীর্ণ ও ভানমূলক হিসেবে বের করতে। কিন্তু বের করতে পারেনি সে। মেয়েটি ছিল মেধাবী, আর সে ছিল ভীতু। তার মনে হয়েছিল তার নিজেরই সতর্ক মেধা শুকনো শিমের মতো আকৃতিতে সঙ্কুচিত হয়েছে।

এসপ্রেসো মেশিনটি একবার চালু হচ্ছিল না। মেয়েটি শেষ করার পর হাততালির আগে নীরবতা বজায় ছিল। কারণ লোকজন জানত না এ মেশিন থেকে কী তৈরি হয়, কীভাবে নিতে হয়। তা জিনিসটা তাদের জন্য যা-ই করে থাকুক না কেন। মুহূর্তের জন্য মেয়েটি বাস্তবতার রূপান্তর ঘটিয়েছিল। আর এতে মেশিনটি ফিরে পেয়ে তারা দম ফেলেছিল।

নারী কবিটির খালি পা ঠেলে গিয়ে রিচার্ড দাঁড়িয়ে পড়েছিল। তার জানাশোনা কে কে থাকতে পারে সেটা নিয়ে রিচার্ড আর পরোয়া করেনি। ম্যাক্সের এনে দেওয়া এক কাপ কফি নিয়ে সেলিনা যেখানে সবেমাত্র বসে পড়েছিল সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছিল রিচার্ড।

‘আপনার কবিতা আমার পছন্দ হয়েছে।‘ বের হওয়ার উপায় খুঁজে বলেছিল রিচার্ড।

পছন্দ? পছন্দ?’ ভেবেছিল যে, সেলিনা তাকে নিয়ে মজা করছিল। যদিও হাসেনি সে। ‘ ‘’পছন্দ হয়েছে” অভিব্যক্তিটা এত বারোয়ারি। খুব ভালো লেগেছে বললে কেমন হয়?’

প্রথমত পছন্দ হয়েছে বলার জন্য এবং দ্বিতীয়ত সেলিনার রিংয়ের মধ্য দিয়ে লাফ দেওয়ার জন্য দু’বার বোকার মতো মনে হয়েছিল নিজেকে। আর বলেছিল, ‘তাহলে খুব ভালো লেগেছে।‘ তবে রিচার্ড তার প্রাপ্যটা পেয়েছিল। সেলিনা তাকে বসতে বলেছিল।

সেলিনার চোখদুটো ছিল নীলাভ সবুজ। আইরিসগুলো ছিল বিড়ালের আইরিসের মতো কালো কিনারবিশিষ্ট। কানে ছিল গোবরে পোকার আকারযুক্ত নীল-সবুজ দুল। মুখমণ্ডল ছিল হৃদয়-আকৃতির। চামড়া ছিল মলিন। রিচার্ড, যে ফরাসি প্রতীকবাদীদের নিয়ে নাড়াচাড়া করছিল, তার কাছে এটা লাইলাক এর কথা মনে করে দিয়েছিল। পাঁচ হাজার বছর আগে নিল নদে যাত্রাপথে যে কোনও দিন আপনি যেটা পরে থাকবেন।

সেলিনার পারফর্মেন্স মোটামুটি একই রকম ছিল। অদ্ভূত অথচ আশ্বস্ত। পুরোপুরি অর্জিত। সবচেয়ে খারাপ দিকটা ছিল তার বয়স ছিল সবেমাত্র আঠারো।

রিচার্ড বলার চেষ্টা করেছিল, ‘শালটা তো সুন্দর।‘ কিন্তু তার জিহ্বাকে যেন গোমাংসের স্যান্ডউইচের মতে লেগেছিল।

সেলিনা বলেছিল, ‘এটা শাল না, টেবিলক্লথ। বলে নিচে তাকিয়ে আলতোভাবে বুলিয়েছিল। তারপর একটু হেসে বলেছিল, ‘এখন এটা শাল।‘

রিচার্ড ভেবে পাচ্ছিল না যে, সে কি সাহস করে জিজ্ঞেস করবে—কোন জিনিসটা? তাকে হেঁটে বাসায় নিয়ে যাবে কি না? বাসার মতো তার এত সাধারণ কোনও কিছু ছিল কি? কিন্তু যদি সে না বলে দিত, তাহলে কী হত? যখন সে এসব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছিল, তখন বুলেট মাথার কফিওয়ালা ম্যাক্স হেঁটে গিয়ে সেলিনার কাঁধে অধিকারের একটা হাত রেখেছিল। আর সেলিনা তার দিকে হাসি দিয়েছিল। এর মানে কিছু ছিল কি না সেটা দেখার জন্য রিচার্ড অপেক্ষা করেনি। দোহাই খুঁজে সে সরে পড়েছিল।

ভাড়া করা রূমে ফিরে গিয়ে রিচার্ড সেলিনার উদ্দেশ্যে একটা সেস্টিনা রচনা করেছিল। চেষ্টাটা তেমন সফল ছিল না। এতে সেলিনার কিছুই সে ধরতে পারেনি। আগে যেটা তার কবিতায় সে কখনও করেনি সেটাই তার একটা কবিতায় করেছিল। কবিতাটি পুড়িয়ে ফেলেছিল সে।

পরের কয়েক সপ্তাহে রিচার্ড সেলিনাকে আরও ভালোভাবে জানতে পেরেছিল। অথবা তার মতে সে পেরেছিল। মঙ্গলবারের রাতগুলোতে সে কফি হাউজে এলে সেলিনা মাথা নিচু করে ঝাঁকিয়ে অভিবাদন জানাত, হাসি দিত। রিচার্ড তার কাছে গিয়ে বসে পড়ত। আর তাদের কথা হত। সেলিনা নিজের সম্পর্কে, নিজের জীবন সম্পর্কে কখনও কিছু বলত না। তার বদলে সে রিচার্ডের সাথে এমন ব্যবহার করত যেন তার নিজের মতো রিচার্ড একজন সহ-পেশাদার ব্যক্তি, একজন শিক্ষানবীস। তার কথার বিষয় ছিল ম্যাগাজিন নিয়ে, যেখানে তার কবিতা গৃহীত হয়েছিল। বিষয় ছিল প্রজেক্ট নিয়ে, যা সে শুরু করেছিল। রেডিওর জন্য সে পদ্য নাটক লিখছিল। এর জন্য তাকে টাকা দেওয়া হত। মনে হচ্ছিল সে ভাবছিল যে, বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট টাকা উপার্জন করাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদিও যথেষ্ট সম্পর্কে তার ধারণাটা যথেষ্ট ছিল না। এ মুহূর্তে সে কী করে জীবিকা নির্বাহ করছিল সেটাও বলেনি।

রিচার্ডের মনে হয়েছিল সেলিনা সরল ও অকপট। রিচার্ড নিজেও যুক্তিসঙ্গত একটা কোর্স নিয়েছিল। গ্রাজুয়েট ডিগ্রি দিয়ে আ্যাকাডেমিক লবন-খনিতে সে এক রকম আয় করত। কিন্তু কবিতার জন্য কে-বা জীবন-ধারণের টাকা দিত? বিশেষ করে সেলিনা যে আঙ্গিকে লিখত। কারও শৈলীতে পরত না। অন্য কিছুর মতো শোনাতও না। অতিমাত্রায় খেয়ালি কবিতা ছিল।

দশতলার ওপরে ছাদের পার্শ্বদেশ বরাবর ঘুমের মধ্যে হেঁটে চলা এক শিশুর মতো ছিল সেলিনা। তাকে সতর্কতাস্বরূপ জোরে ডাক দিতে রিচার্ডের ভয় হত, যদি জেগে উঠে পড়ে যায় সেলিনা।

লাইব্রেরিয়ান ম্যারি জো রিচার্ডকে কয়েক বার ফোন করেছিল। অতিরিক্ত কাজের ব্যাপারে রিচার্ড তাকে অস্পষ্ট বিড়বিড়ানি দিয়ে চুপসে দিয়েছিল। কদাচিৎ কোনও রোববারে কাপড়-চোপড় ধোয়া-কাচা ও তার বাবা যেটাকে বলত ভালো খাবার তা খাওয়ার জন্য তার পিতামাতার বাড়িতে এলে তার মায়ের ব্যথাভরা নিরীক্ষণ সহ্য করতে হত তাকে। মায়ের তত্ত্বকথা ছিল যে, সে তার মগজের ওপর চাপ ফেলছে। এতে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। আসলে রিচার্ড কাজ তেমন করত না। না দেখা খাতা দিয়ে, জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ পার হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের খাতা দিয়ে তার রূমটি সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। আর কোনও কবিতাও লেখেনি। একটা লাইনও না। তার বদলে গামি এগ স্যান্ডউইচ কিংবা স্থানীয় মদ-পানীয়ের দোকানে ড্রাফট বিয়ারের জন্য অথবা বিকেলবেলার ছবি দেখার জন্য সে বের হত। দু’মাথাবিশিষ্ট চরিত্রহীন দু’মুখো নারীদের ওপর কিংবা মাছিতে রূপান্তরিত হওয়া পুরুষদের ওপর বানানো ছবি দেখতে যেত। সন্ধ্যাগুলো কফি-হাউজেই কাটাত। নিজেকে আর ক্লান্ত ও বিরক্ত লাগত না। বেপরোয়া লাগত।

সেলিনাই তার এ বেপরোয়া ভাবের জন্য দায়ী। কিন্তু কেনর কোনও নাম ছিল না তার কাছে। অংশত এ কারণে যে, রিচার্ড সেলিনার ভেতরে ঢুকতে চেয়েছিল। ঢুকে অন্দরমহলের গুহাটা পেতে চেয়েছিল, যেখানে সেলিনা তার মেধাকে লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু সেলিনা তার সাথে একটা দূরত্ব বজায় রেখেছিল। দূরত্বটা তার সাথে এবং কোনও না কোনও ভাবে অন্য সবার সাথেও।

সেলিনা কয়েক বার পড়েছিল। কবিতাগুলো আবারও আশ্চর্যজনক ছিল, আবারও অনন্য ছিল। তার দাদীর সম্পর্কে কিংবা তুষার সম্পর্কে অথবা ছেলেবেলা সম্পর্কে ছিল না কিছুই। মূমুর্ষূ কুকুর কিংবা যে কোনও ধরণের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও কিছু ছিল না। তার বদলে ছিল রাজকীয়, কৌশলী নারী, যাদুকরী, দেহ রূপান্তরকারী পুরুষ। রিচার্ড ভেবেছিল যে, বোহেমিয়ান এমব্যাসিতে নিয়মিত আসা-যাওয়া যারা করত তাদের কারও কারও রূপান্তরিত দেহাবয়ব এদের মধ্যে সনাক্ত করা যায়। ওটা কী ম্যাক্সের সাদা চুলের বুলেট মাথা ছিল? তার ঢাকা বরফ-নীল চোখ ছিল? আরেক জন চিকন গুরুগম্ভীর গোঁফওয়ালা পুরুষ ছিল। তার দৃষ্টিতে ছিল চাপা আগুন। রিচার্ড এতে অস্বস্থি বোধ করেছিল। এক রাতে সেই লোকটি টেবিলের সবাইকে ঘোষণা দিয়েছিল যে, জায়গামতো তার উকুন হয়েছিল, আর সেখানকার চুলগুলো কামিয়ে তার কটিদেশে নীল রঙ করতে হয়েছে। সেটা কি হতে পারত জ্বলন্ত ডানায় সজ্জিত তার মূল শরীর? রিচার্ড বলতে পারছিল না। আর সেটা তাকে পাগল করে তুলছিল।

(তবে রিচার্ড নিজে কখনও ছিল না। কখনই তার নিজের নাদুস-নুদুস অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নয়, হালকা বাদামি চুল নয়, হিজল-চোখও নয়। তার সম্পর্কে একটা লাইনও নয়।)

নিজেকে সামলে নিয়ে সে পরীক্ষার খাতাগুলোতে নম্বর বসিয়েছিল, হেরিকের মেকানিজম চিত্রকল্প নিয়ে একটা রচনা শেষ করেছিল। পরবর্তী শিক্ষাবছরে উন্নীত হতে রচনাটি শেষ করা তার প্রয়োজন ছিল। ম্যারি জোকে মঙ্গলবারের একটি কাব্য সন্ধ্যায় সে নিয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিল যে, এ ঘটনা সেলিনাকে নিরপেক্ষ করে তুলবে, যেভাবে এসিড ক্ষারকে নিরপেক্ষ করে। ভেবেছিল যে, তার মাথা থেকে সেলিনার চিন্তাটা বের করে দেবে। ম্যারি জো এতে মুগ্ধ হয়নি।

ম্যারি জো বলেছিল, ‘ঐসব পুরানো ন্যাকড়া কাপড় সে কোথায় পায়?

রিচার্ড বলেছিল, ‘সে একজন প্রতিভাবান কবি।‘

‘তাতে কী? ঐ জিনিসটা তো টেবিলক্লথের মতো দেখাচ্ছে। আর চোখদুটো মেকিভাবে সাজিয়েছে কেন?’

ব্যক্তিগত ক্ষতের মতো রিচার্ডের এতে লেগেছিল।


১ম পর্ব                                                                                                                   ৩য় পর্ব

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*